মরণব্যাধি ক্যান্সার এর নাম শুনেন নি বা এটা নিয়ে কেউ আতংক গ্রস্থ না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া অসম্ভব। ক্যান্সার এক ভয়ংকর রোগের নাম, যার নাম শুনলেই নিশ্চিত মৃত্যু এটা মাথায় চলে আসে।
ক্যান্সার কী
আমাদের শরীর অসংখ্য কোষ দ্বারা গঠিত। কোষগুলো প্রতিনিয়ত বিভাজনের মাধ্যমে বৃদ্ধি প্রাপ্ত হয় এবং পুরোনো কোষগুলো মরে যায়। সে জায়গায় নতুন কোষ প্রতিস্থাপিত হয়। এই প্রক্রিয়াটি একটি সুনির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলে। কোন কারণে যদি যদি সে নিয়ম ব্যাহত হয় তবে সেই পুরোনো কোষগুলো না মরে অস্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধি পায়। যা থেকে টিউমার কোষের সূত্রপাত হয় (লিউকোমিয়ায় ব্যতিক্রম)। টিউমার মূলত চাকা বা পিন্ডের ন্যায়। টিউমার দুই রকমের যেমন বিনাইন ও ম্যালিগনেন্ট টিউমার। বিনাইন টিউমার ক্ষতিকর নয়। কিন্তু ম্যালিগনেন্ট টিউমার ই ক্যান্সারের জন্য দায়ী। এই টিউমার যেখানে উৎপন্ন সেখানে থাকে না বরং অন্যান্য কোষকে আক্রমণ করে এবং তা সারা দেহে ছড়িয়ে পড়ে। আর সেটার ই পরিচিত নাম ক্যান্সার।
ক্যান্সারের কারণ কি?
ক্যান্সারের কারণ ব্যাপক। একটি পরিসংখ্যানে বলা হয় ক্যান্সারের জন্য ১০ ভাগ দায়ী বংশগত জিন যা এক প্রজন্ম থেকে ছড়ায়। বাকি ৯০ ভাগ ই হয় পরিবেশ গত কারণে।
ক্যান্সারের জন্য বয়স কে ও দায়ী করা হয় অনেক সময়৷ কারণ ক্যান্সার রোগীদের প্রায় ১০ জনের ৯ জন ই ৫০ বছরের উর্ধ্ব বয়স্ক।
আবার এক গবেষণায় দেখা যায় নারীদের চেয়ে পুরুষেরা এই রোগে বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকেন।
আসুন জেনে নেওয়া যাক ক্যান্সারের কারণ আরও কী কী হতে পারেঃ
- ধূমপান, তামাক ও এলকোহল সবচেয়ে বড় কারণ বলা হয়। শতকরা ৪০ ভাগ ক্যান্সারের প্রধান কারণ ধূমপান। ধূমপানের ফলে ফুসফুস, মুখগহ্বর, খাদ্যনালী, কিডনি, মূত্রথলী, ব্লাড ক্যান্সার এবং এলকোহল সেবনের কারণে মুখে, লিভারে, কিডনি ক্যান্সার হয়ে থাকে। আর শতকরা ৮০ভাগ ফুসফুসে ক্যান্সারের জন্য তামাক দায়ী।
- ওজন বেশি হলে ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। মহিলাদের ব্রেস্ট ক্যান্সার হওয়ার অনেক বেড়ে যায় ওজনের কারণে।
- ডায়বেটিসের কারণেও হতে পারে ক্যান্সার। অনিয়ন্ত্রিত ডায়বেটিস প্যানক্রিয়াকিক, হেপাটোবিলিয়ারি ক্যান্সারের জন্য অনেকাংশে দায়ী।
- তাছাড়া যারা চর্বি যুক্ত খাবার ও ফাস্ট ফুড বেশি খান তাদের ও এই মরণ ব্যাধি ক্যান্সার হওয়ার আশংকা থাকে।
- রেডিয়েশন ও সূর্যের আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মির কারণে চানড়ায় ক্যান্সার হয়ে থাকে।
- নারীদের হরমোনের তারতম্যের কারণে হতে পারে ইউটেরাস ক্যান্সার।
- অস্বাভাবিক যৌনাচার ও মাল্টিপল সেক্সুয়াল পার্টনারের কারণে নারীদের জরায়ু ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।
- বিভিন্ন ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার কারণে ও ক্যান্সার হতে পারে। হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (HPV) এর জন্য সারভাইকাল, এপস্টাইন -বার ভাইরাস (EPV) এর জন্য বার্কিট লিম্ফোবা, এইচ পাইলোরি (H.Pylori) এর জন্য পাকস্থলী এবং হেপাটাইটিস ভাইরাস (Hepatitis V) এর জন্য লিভারে ক্যান্সার হয়ে থাকে। তাছাড়া এইচ আই ভি (HIV) এর সংক্রমন থেকে কাপেসি সারকোমা নামক ক্যান্সার হয়ে থাকে।
মানব দেহে সংঘটিত ক্যান্সারের প্রকার ভেদ
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা WHO এর মতে প্রায় ২০০ টির ও বেশি ক্যান্সারের প্রকারভেদ রয়েছে যা বিভিন্ন অঙ্গ ও প্রত্যঙ্গতে হয়ে থাকে।
তবে প্রধান প্রকার ২ টি।
- সোলিড টিউমার ক্যান্সার যা দেহের বিভিন্ন অঙ্গে হয়ে থাকে। যেমনঃ ব্রেস্ট ক্যান্সার, প্রোস্টেট ক্যান্সার, কোলন ক্যান্সার, সারকোমা, কিডনি ক্যান্সার ইত্যাদি।
- অন্যটি হলো হেমাটোলজিক্যাল ক্যান্সার যা রক্ত গঠনকারী টিস্যুতে হয়। যেমন: লিউকোমিয়া, মাইলোমা, লিম্ফোমা ইত্যাদি।
কি করে বুঝবো আমাদের এই ব্যাধি বেঁধেছে কি না?
ক্যান্সারের উপসর্গ গুলো ক্যান্সারের ধরন অনুযায়ী ভিন্ন হয় এবং ভিন্ন ভাবে প্রকাশ পায়। তবে কিছু সাধারণ উপসর্গ রয়েছে যা নিম্ন রুপঃ
- খুব ক্লান্তি বোধ করা
- ক্ষুধামন্দা
- শরীরের যে কোন জায়গা শক্ত হয়ে যাওয়া
- চাকা বা পিন্ড অনুভুত বা দেখা যাওয়া
- দীর্ঘ স্থায়ী কাশি বা গলার স্বর পরিবর্তন
- অনেক দিন ধরে ব্যথা
- অস্বাভাবিক জ্বর বা ঘেমে যাওয়া
- রক্তপাত
- ত্বকের পরিবর্তন
- আঁচিলের পরিবর্তন
- কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়া
- অস্থিরতা
- হঠাৎ করে ওজন কমে যাওয়া
ক্যান্সার বিশষজ্ঞ ডাক্তার রাজশাহী
ক্যান্সার মানে ই মৃত্যু নয়৷ প্রাথমিক স্তরে ক্যান্সার ধরা পড়লে তা পুরোপুরি চিকিৎসা যোগ্য।
রাজশাহীতে অনেক ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ বা অঙ্কোলজিস্ট রয়েছেন যারা ক্যান্সারের সু চিকিৎসা করেন। বিশেষজ্ঞগণ ক্যান্সারের ধরন, অবস্থান, কোন স্টেজে রয়ছে এবং কতখানি ছড়িয়ে পড়েছে এইগুলোর উপর ভিত্তি করে
- সার্জারি,
- থেরাপি ও
- চিকিৎসা ব্যবস্থা করে থাকেন।
অনেক সময় থেরাপি ও সঠিক চিকিৎসায় পুরাপুরি নিরাময় না হয়েও রোগী ক্যান্সার নিয়ে বেঁচে থাকেন অনেক সময়।
ক্যান্সার রোগীর সেবায় রয়েছেনঃ
এমবিবিএস , বিসিএস(স্বাস্থ্য)
এমফিল রেডিও থেরাপি (বি.এস.এম.এম.ইউ)
সহকারী অধ্যাপক ,ক্যানসার বিশেষজ্ঞ
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, রাজশাহী
এমবিবিএস, এমসিপিএস, এফসিপিএস(রেডিও থেরাপী),
এফআরসিপি(এডিন), পিএইচডি(অনকোলজী)
ফেলো: ওয়ার্লড হেলথ অর্গানাইজেশন(চায়না, ইনডিয়া, থাইল্যান্ড)
ভাইস প্রেসিডেন্ট – বাংলাদেশ ক্যানসার সোসাইটি
এমবিবিএস (ডিএমসি), বিসিএস (স্বাস্থ্য) এমডি (অনকোলজি), এমএসিপি (আমেরিকা)
ক্যান্সার রোগ বিশেষজ্ঞ
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল
চেম্বার ও সময়সুচি জানতে ডাক্তারের নামের উপর ক্লিক করুন
রাজশাহীর যেকোনো বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের তথ্য, সিরিয়াল ও আমাদের সেবা পেতে যোগাযোগ করুন: 01317823580