মনোরোগ হচ্ছে মনের রোগ। মনোরোগের কারণে ব্যক্তি অস্বাভাবিক আচরণ করে, যা তার সামাজিক,পারিবারিক ও পেশাগত জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। রোগীর জীবনে নেমে আসে চরম দুর্ভোগ।
শরীরের অসুখকে মানুষ যেভাবে দেখে বা মূল্যায়ন করে বা প্রতিকারের চেষ্টা করে সেভাবে মনের অসুখে এভাবে করে না। কারন এই বিষয়ে আমাদের আশে পাশের মানুষজন এখনো অজ্ঞ। বাংলাদেশে মানসিক স্বাস্থ্যসেবার তেমন ভালো কোন প্লাটফর্ম নেই, ফলে মানুষ তার সমস্যা নিয়ে বসে থাকে যা দিন দিন জটিলতা তৈরি করে।
আজ আমরা এই নিবন্ধে এই মনোরোগ বা মানসিক রোগের কারণ ও মনোরোগ বিশেষজ্ঞ সম্পর্কে জানবো।
মনোরোগের কারণঃ মনোরোগের সঠিক কারন এখনো অজানা রয়েছে। তারপরেও বলা যায় এটা বংশ গত, পরিবেশগত হয়ে থাকতে পারে। আবার কোন কোন ঘটনা এমন হয় যে মানসিক রগে আক্রান্ত ব্যক্তির অতীতের বড় কোন দুর্ঘটনা, হতে পারে সেক্সুয়াল হ্যারেসমন্ট। আবার যে ব্যক্তি শিশুকালে অস্বাভাবিকভাবে লালন পালন হয়ে থাকে তাদের পরবর্তী জীবনে মানসিক রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
আবার অনেকে প্রচুর ডিপ্রেশনে ভুগেন। কেউ যদি ২ সপ্তাহের বেশি অতিরিক্ত ডিপ্রেশনে থাকেন তাহলে তার এই মানসিক রোগ হয়ে থাকে। এই ডিপ্রেশন থেকে মানুষের আত্নহত্যার প্রবণতা দেখা যায়।
আর একটি কথা এখানে বলা যায় যে, প্রসব কালীন সময়ে মহিলাদের শারীরিক ও মানসিক অবস্থার অবনতি হয়, অনেক সময় মায়েদের মানসিক বিপর্যয়ের শুরু হয় এই সময়ে। পরিবারের অবহেলার কারণে তা অনেক করুণ পরিণতি সৃষ্টি করে।
মনোরোগের প্রকারভেদ ও লক্ষণঃ
মানসিক রোগ ২ ধরণের হয়ে থাকে।
১। নিউরোসিসঃ এটা মৃদু মানসিক সমস্যা। মানুষ সামাজিক, পারিবারিক, অর্থনৈতিক বা পেশাগত কারণে বিভিন্ন চাপের মধ্যে দিয়ে যায়। কোন সময় সেটা বুঝা যায়, কোন সময় বুঝা যায় না। আর এভাবে নিউরোসিসের শুরু হয়। অনেকে এটা কে মানসিক ব্যধি বলে মনে করেন না ফলে সমস্যা বড় আকার ধারন করে। নিউরোসিসে বেশি সংখ্যক মানুষ ভুগে থাকেন।
আমরা নিম্নের উপসর্গ গুলো দেখতে পারি যেন বুঝতে পারি নিউরোসিস হলে ব্যক্তি কি ধরনের আচরণ করতে পার। এই গুলো হলো নিউরোসিসের মানসিক লক্ষণ
- মন মেজাজ খারাপ হয়ে থাকা
- অস্থিরতা ও ভয়
- স্মৃতি শক্তি লোপ
- হীন মন্যতা
- অতি আবেগ বা সামান্যতে কান্না
- মনোযোগের অভাব
- অতিরিক্ত মৃত্যু চিন্তা ও অসহায় বোধ ইত্যাদি।
নিউরোসিসে কিছু শারীরিক লক্ষণ ও দেখা যায় যা হলো-
- ঘুমের সমস্যা
- বুক ধড়ফড় করা
- চোখে ঝাপসা দেখা
- হাত ও পা গরম বা ঠান্ডা হয়ে যাওয়া
- অজ্ঞান হয়ে যাওয়া ও শ্বাস কষ্ট
- মাথা ব্যথা ও বুকে চাপ অনুভূত হওয়া
- হাত ও পা কাঁপা সহ ইত্যাদি
২। সাইকোসিসঃ ব্যক্তি যখন বাস্তব ও কল্পনা প্রসূত ঘটনা আলাদা করতে পারে না তখন সেটা সাইকোসিস বলে বিবেচনা করা হয়। সাইকোসিসে ব্যক্তির উন্মাদতার প্রকাশ ঘটায়। এটা গুরুতর মানসিক সমস্যা যা ব্যক্তির স্বাভাবিক জীবন যাপন কেড়ে নিতে যথেষ্ট।
সাইকোসিসে আক্রান্ত ব্যক্তি হ্যালুসিনেশনে ভুগে থাকেন। হ্যালুসিনেশনে ব্যক্তি বাস্তব জগত ও অবাস্তব জগতের পার্থক্য করতে পারেন না। এটাকে দৃষ্টিভ্রম ও বলা হয়।
আবার সাইকোসিসে আক্রান্ত ব্যক্তি চারপাশের এমন কি পরিবারের লোকজন দ্বারা ও ক্ষতি হওয়ার আশঙ্খায় থাকেন যা সম্পুর্ন ভিত্তিহীন।
সিজোফ্রেনিয়া ও বাই পোলার ডিস অর্ডার ও সাইকোসিসের ২টি সাধারন রোগ।
সাধারণত এটি বংশগত কারনে হয়ে থাকে বলে বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন। আবার মাদক সেবন, বিবাদ পূর্ন পরিবেশ , পার্কিন্স সহ আর নানা মাথার রোগ বা মাথার টিউমারের জন্য এটি হয়ে থাকে।
এর লক্ষ্ণ গুলো নিম্ন রুপ
- অতিরিক্ত ঘুম বা কম ঘুম
- বিষন্নতা
- অতিরিক্ত চিন্তা
- সামাজিক দুরত্ব
- হ্যালিসিনেশন
- মনোযোগের অভাব
- আত্নহত্যার চেষ্টা
মনোরোগের চিকিৎসাঃ
মানসিক সমস্যাকে অনেক মানুষ ই হালকা ভাবে নিয়ে থাকেন। তাছাড়া অনেকে এই সমস্যায় হাতুড়ে ডাক্তার বা কবিরাজের শরনাপন্ন হন, ফলে সমস্যা আরো গুরুতর হয়। আমাদের উচিত কার আচরণ আস্বাভাবিক হলে তাকে একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখানো। শারীরিক সমস্যা গুলো যেভাবে পরীক্ষা করে শনাক্ত করা যায় মনের সমস্যা কখনোই পরীক্ষা করে শনাক্ত করা যায় না। এই সমস্যা আলোচনা করে বের করতে হয়, পরে চিকিৎসকেরা বুঝে তাদের বিধিমালা দিয়ে থাকে।
১. ডা: মামুন হোসেন
এমবিবিএস, এমফিল, পিএইচডি, এফসিপিএস
বিভাগীয় প্রধান
মনরোগ বিভাগ
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।
২. ডা: মো: রাকিবুজ্জামান চৌধুরী (সৈকত)
এমবিবিএস, বিসিএস(স্বাস্থ্য), এমসিপিএস(সাইকিয়াট্রি), পিএইচডি(ফেলো)
মানসিক, যৌন সমস্যা ও মাদকাসক্তি রোগ বিশেষজ্ঞ
কনসালটেন্ট সাইকিয়াট্রিস্ট
মনোরোগ বিভাগ
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
কনসালটেন্ট
মানসিক হাসপাতাল, পাবনা (প্রাক্তন)
রাজশাহীতে এই বিষয়ের অনেক বিশেষজ্ঞ ডাক্তার রয়েছেন, তারা হলেন–
৩. ডা: মোঃ জসিম উদ্দীন
এমবিবিএস (আরএমসি), বিসিএস (স্বাস্থ্য), এমডি (সাইকিয়াট্রি)-বিএসএমএমইউ
মানসিক , স্নায়ুবিক ,মাদকাসক্ত, ও সেক্সুয়াল রোগ বিশেষজ্ঞ এবং সাইকোথোরাপিস্ট
সহকারী অধ্যপক
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, রাজশাহী
৪. অধ্যাপক ডাঃ মোঃ আহসানুল হাবীব
এমবিবিএস, এফসিপিএস (সাইকো) , ফেলো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ভারত)
মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ
পরিচালক ও অধ্যাপক (অবঃ)
মানসিক হাসপাতাল পাবনা
৫. ডা: মো: মোয়াজ্জেম হোসেন
এমবিবিএস, ইউএসএমএলই(আমেরিকা),
এমডি(সাইকিয়াট্রি, আমেরিকা), পিজিটি(আমেরিকা)
মানসিক, মাদকাসক্ত এবং সাইকো থেরাপিষ্ট
স্পেশাল ইন্টারেষ্ট – চাইল্ড সাইকিয়াট্রি ও ইনফার্টিলিটি
৬. ডা: মোস্তফা আলীম
এমবিবিএস, এমডি(সাইকিয়াট্রি)
প্রাক্তন সহকারী অধ্যাপক
পাবনা মানসিক হাসপাতাল
সহকারী অধ্যাপক
মানসিক রোগ বিভাগ
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল
৭. ডাঃ গোলাম মাওলা
(মনোরোগ বিশেষজ্ঞ)
সহযোগী অধ্যাপক
বারিন্দ্র মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল,রাজশাহী
৮. ডা. মইনুদ্দিন আহমেদ
এমবিবিএস, এমফিল (সাইকিয়াট্রি)
সহযোগী অধ্যাপক
মনোরোগ বিদ্যা বিভাগ
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ, রাজশাহী
৯. ডাঃ গোপাল চন্দ্র সরকার
(মনোরোগ বিশেষজ্ঞ)
অধ্যাপক
বারিন্দ্র মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল,রাজশাহী
১০. ডাঃ মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন
এমবিবিএস, বিসিএস, এমডি (সাইকিয়াট্রি)
মনোরোগ বিশেষজ্ঞ জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউট ও হাসপাতাল শেরেবাংলা নগর, ঢাকা
মানসিক, মাথা ব্যথা, মাদকাসক্তি ও মনোযৌন রোগ বিশেষজ্ঞ
১১. প্রফেসর ডাঃ তন্ময় প্রকাশ বিশ্বাস
এমবিবিএস, বিসিএস,
এমফিল (সাইকিয়াট্রি), পিএইচডি
প্রফেসর এবং বিভাগীয় প্রধান
মানসিক বিভাগ, পাবনা মেডিকেল কলেজ
সিনিয়র কনসালটেন্ট (এক্স), মানসিক বিভাগ, পাবনা
১২. অধ্যাপক ডাঃ মোঃ আবু তাহের
এমবিবিএস,এমফিল (সাইকিয়াট্রি)
অধ্যাপক ও বিফাগীয় প্রধান ,মানসিক বিভাগ
১৩. ডাঃ মোঃ মাসুদ রানা সরকার
এমবিবিএস, বিসিএস, এফসিপিএস (সাইক্রিয়াট্রি)
মানসিক ও মাদকাসক্ত রোগ বিশেষজ্ঞ
কনসালটেন্ট
পাবনা মানসিক হাসপাতাল, পাবনা
১৪. ডাঃ শাফকাত ওয়াহিদ
এমবিবিএস (ডিএমসি), এমসিপিএস(সাইকিয়াট্রি),
এফসিপিএস (সাইকিয়াট্রি)
মানসিক রোগ, ব্রেন রোগ, সেক্স সমস্যা ও মাদকাসক্তি বিশেষজ্ঞ
ফেলো অফ ইন্ডিয়ান সাইকিয়াট্রিক সোসাইটি
১৫. ডাঃ এম. এম রানা
এমবিবিএস, বিসিএস এমডি (চাইল্ড এন্ড এডোলেন্সেন্ট সাইকিয়াট্রি)
কনসালটেন্ট, মনোরোগ বিভাগ
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, রাজশাহী।